বাড়তি ব্যয়ের কবলে আমন চাষিরা

বর্ষার ভরা মৌসুমেও আশানুরূপ বৃষ্টি নেই। ফলে বৃষ্টির পানির অভাবে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার আমন চাষিদের সেচপাম্পের পানিই এখন একমাত্র ভরসা। আমন চাষের আশায় জমি তৈরি করে বৃষ্টির পানিতে চারা রোপণের আশায় থাকলেও কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতে পানি নেই। ফলে এখন গভীর-অগভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি তুলে সেচ দিয়ে আমন চারা রোপণ করতে বাধ্য হচ্ছে উপজেলার কৃষকরা। এতে শুরুতেই আমন চাষের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে কৃষকদের।এদিকে উপজেলা কৃষি বিভাগ কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় আমন চারা রোপণ ব্যাহত এবং উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও আশা প্রকাশ করছে যে, শ্রাবণের শেষ নাগাদ বৃষ্টি হলে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, জমিতে হালচাষ দেওয়ার মতো পানি না থাকায় কৃষকরা সেচপাম্প থেকে পানি নিয়ে জমি তৈরি করছেন। উপজেলার তৈয়বপুর গ্রামের কৃষক মোকলেছুর রহমান জানান, আষাঢ় মাস থেকে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছে সবাই। কিন্তু এ পর্যন্ত জমিতে হালচাষ দেওয়ার মতো পানি জমেনি। ফলে বাধ্য হয়ে শ্যালোমেশিন (অগভীর নলকূপ) থেকে পানি সেচ দিয়ে জমি চাষ করতে বাধ্য হচ্ছে সকলেই। জমিতে একবার পানি দেওয়ার জন্য বিঘাপ্রতি পাম্প মালিককে দিতে হচ্ছে ৫০০ টাকা করে। যা বাড়তি খরচ। বেড়ে যাচ্ছে চাষের ব্যয়। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এই উপজেলায় মোট ১৯ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভরা মৌসুমে বৃষ্টি না হলে আমন চারা রোপণ করা খুবই কষ্টের হবে। সেচের পানি জমিতে ধরে রাখা সম্ভব হবে না। কারণ আশপাশের জমি শুকনো থাকলে যে জমিতে পানি সেচ দিয়ে চাষ করা হবে তার পানি পার্শ্ববর্তী জমি শোষণ করে নেবে। ফলে কৃষকদের নিয়মিত জমি সেচ দিতে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হবে। ইতোমধ্যেই অনেক জমিতে চারা লাগানোর পর সেচ না দেওয়ার কারণে সেসব জমির মাটি শুকিয়ে চৌচির হতে শুরু করেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মু. মশিদুল হক বলেন, কৃষকরা সেচ দিয়ে হলেও যেন চারা রোপণ শুরু করেন, সে জন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, শ্রাবণের শেষ নাগাদ বৃষ্টি হলে আমন চাষে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।